• ঢাকা, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চেনা-অচেনা হাজারো পাখির কলরব

যান্ত্রিক নগরী ঢাকায় পাখির ডাক শোনার সুযোগ খুব কম। তারপরও মাঝে মাঝে ফুটপাত ধরে হাঁটার সময় কোনো গাছ থেকে পাখির ডাক কানে আসে। ডাক শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে পাখিটাকে একনজর দেখার চেষ্টা করেন অনেকে। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে ডালে কিংবা পাতার আড়ালে বসে থাকা পাখিকে দেখার জন্য থামা হয় না।

তবে একসঙ্গে অনেক পাখি দেখে এবং তাদের ডাক শুনে না থেমে উপায় আছে? সে জন্য গত ১০ মার্চ, শুক্রবার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) টিএসএসি প্রাঙ্গণে থামতে হলো শিক্ষার্থী রিফাত ইসলামকে। সেখানে পাখিপ্রেমীদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল ‘এভিয়ান এক্সোটিক বার্ড শো অ্যান্ড ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২৩’।

এদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাহারি রঙের নানা জাতের পাখির ডাকে মুখর ছিল শেকৃবির টিএসসি প্রাঙ্গণ। সেখানে ঘুরে ঘুরে চেনা-অচেনা পাখি দেখেন রিফাতের মতো অনেকে। শৌখিন পাখি পালকদের ফেসবুকভিত্তিক সংগঠন এভিয়ান কমিউনিটির আয়োজনে এই প্রদর্শনীতে ছিল প্রায় ৫০টি স্টল। রাজধানীতে মুক্ত আকাশে পাখি দেখার সুযোগ না থাকলেও খাঁচায় পোষা পাখি দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন দর্শনার্থীরা।

টিএসসি প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, বাহারি রং, গড়ন, গঠন ও আকৃতির প্রায় ৪০ প্রজাতির দেড় হাজার পাখি প্রদর্শনীর জন্য আনা হয়েছে। এত পাখি দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন তরুণ-তরুণী, শিশু-বৃদ্ধরা। স্টল প্রদর্শনকারীরা তাঁদের সঙ্গে নিয়ে আসা পাখির জাত ও যাবতীয় বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করছেন। পাখির দাম ও প্রাপ্যতা নিয়ে কথা বলছেন কয়েকজন দর্শনার্থী। পাখি দেখে বেশি উচ্ছ্বাস দেখা যায় শিশু-কিশোরদের মাঝে।

মা-বাবার সঙ্গে উত্তরা থেকে আসা চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিসা রহমান বলে, পাখি তার অনেক প্রিয়। তাদের বাসায়ও কয়েক প্রজাতির পাখি রয়েছে। এখানে এসে নতুন কয়েকটি প্রজাতি দেখে লামিসা বলল, শিগগির আরও কয়েকটি পাখি সংগ্রহ করবে।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন ‘এভিয়ান কমিউনিটি’র সদস্যরা। তারা এনেছেন বাজরিগার, গ্রাস প্যারট, অস্ট্রেলিয়ান নিউফেমা, জাপানিজ স্প্লেনডিড প্যারাটিড, ডায়মন্ড ডট, ফিঞ্জ, স্কারলেট, গ্রে প্যারট, ইয়ং ম্যাকাও, কনুর, লাভ বার্ড ও গোল্ড পিককের মতো নানা বিদেশি প্রজাতির পাখি। দেখা গেল বিদেশি মিষ্টি পাখি গোল্ড ম্যাকাও, কনুর ও লাভ বার্ড। ছিল রোবিনো স্প্লেনডিড ও রেড অব লাইন স্প্লেনডিডের মতো দামি পাখিও।

আয়োজকরা জানান, প্রদর্শিত পাখিগুলোর প্রায় সবই বিদেশি প্রজাতির। বিদেশ থেকে প্যারেন্টস বার্ড এনে দেশীয় ব্রিডারের মাধ্যমে এসব প্রজাতি উৎপাদন করা হয়। শুধু প্রদর্শনীর জন্য আনা হলেও পাখিগুলোর বিক্রয় মূল্য হতে পারে ৪০০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।

এভিয়ান কমিউনিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী বলেন, তারা যে পাখিগুলো পোষেন, সেগুলো বনের পাখি নয়; পোষা পাখি। এগুলো বন অধিদপ্তরের দায়িত্বে না রেখে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করলে এ শিল্পের প্রসার ত্বরান্বিত হবে। এ ছাড়া সরকারের যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা, পাখি পালনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও পাখি খাদ্যের সহজলভ্যতার জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

প্রদর্শনীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাজী ফিরোজ রশিদ এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন এভিয়ান কমিউনিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী

Rent for add